অর্বিট ডেস্ক– সময়টা ১৭৭০। বাংলায় শুরু হল খরা ও দুর্ভিক্ষ। পরিস্থিতি এতোটাই বেসামাল হয়ে উঠল ইংরেজদের তাবড় কর্তা বিপাকে পড়লেন। চারপাশে হাহাকার আর মৃত্যুর রোল। মারা গিয়েছিল এক কোটি মানুষ। ব্রিটিশরা অনুভব করতে শুরু করলো, ভারত মানেই শুরু অপার খাদ্যভাণ্ডার নয়। প্রকৃতিক বিপর্যয় ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।
এর পরেই, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পরিকল্পনা করে প্রকৃতিক বিপর্যয় হোক বা কোনও মহামারি, যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাদ্য মজুত করে রাখতে হবে। আর এমন জায়গায় নির্মাণ করতে হবে, যেখান থেকে আশে পাশের অঞ্চলে পরিবহণও সুগম থাকে।
১৭৭৬ সালে বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ার্সের ক্যাপ্টেন জন গার্স্টিং শুরু করলেন গোলঘর নির্মাণের কাজ। বিহারের পাটনার বাঁকিপুরে তৈরি হল গোলঘর। প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার টনের শস্য দানা মজুত রাখার ঘর। সেই সময় গভর্নর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া ছিলেন ওয়ারেন হেস্টিংস। তাঁর কাছে ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই শুরু হয় গোলঘর নির্মাণের কাজ।
গোলঘরের স্থাপত্য অনেকটা স্তূপাকৃতির। উচ্চতা ২৯ মিটার। দু দিক দিয়ে রয়েছে প্যাঁচানো ১৪৫টি সিঁড়ি। গোলঘরের উপর থেকে শহরের এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখা যায়।
জনশ্রুতি রয়েছে, গোলঘরে কখনই সম্পূর্ণভাবে শস্যদানা দিয়ে ভর্তি করা হয়নি। তার কারণ। সম্পূর্ণ ভর্তি করলে গোলঘরের তিনটি দরজা খোলাই সমস্যার হত। ফলে কিছুটা অংশ ফাঁকাই রাখা হত।
গোলঘরের দেওয়াল প্রায় সাড়ে তিন মিটার চওড়া। ২০১০ সালে বেশ কিছু ফাটল নজরে আসে। তারপরেই বেশ কয়েক দফায় পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বর্তমানে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ এটির সংরক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে।