Breaking News

উইকেন্ডে বেরিয়ে আসুন নবাব আমলের অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গের রাজধানী থেকে

পূর্ণেন্দু ব্যানার্জি- ভাগীরথীর তীরের মুর্শিদাবাদ এক ঐতিহাসিক জনপথ। সেখানে বাংলা বিহার ও ওডিশার রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ। প্রাচীন এই নগরীর পরিচিতি ছিল মুখসুদাবাদ নামে। পরে সুবা বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁয়ের নামানুসারে হয় মুর্শিদাবাদ। ১৭০৪ সালে ঔরঙ্গজেব মুর্শিদকুলি খাঁকে পাঠান মুর্শিদাবাদে।

সেই সময় ঢাকা থেকে বাংলার রাজধানী সরিয়ে আনা হল মুর্শিদাবাদে। বাংলার ইতিহাসে জুড়ল এক নতুন পালক। ভাগীরথীর দুই তীরে গড়ে উঠল প্রাসাদ, মসজিদ, মহল্লা। পরবর্তী সময়ে ইংরেজদের অধীনে আসে এই জনপদ। শুরু হয় লুঠপাঠ আর ধ্বংসলীলা।

বহু দ্রষ্টব্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও এখনও মুর্শিদাবাদে দেখার অনের কিছু আছে। নদীর তীরে গড়ে ওঠা সুবিশাল প্রাসাদ হাজারদুয়ারি এখানকার প্রধান দ্রষ্টব্য। ১৮৩৭ সালে ইন্দো ইউরোপীয় স্থাপত্যকলায় তৈরি এই প্রাসাদে গড়ে উঠেছে সংগ্রাহশালা। প্রাসাদে আসল নকল মিলিয়ে হাজারখানেক দরজা থাকায় হাজারদুয়ারি নাম হয়েছে। প্রাসাদের মধ্যে অস্ত্রাগার, দরবার হল, ফটো গ্যালারি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। প্রাসাদের চারপাশে বাগান আর সবুজ ঘাসের মাঠে ঘেরা। শুক্রবার বন্ধ থাকে।

আরও পড়ুন- গাড়োয়াল সফরে কী কী দেখবেন, কেন দেখবেন?

আরও পড়ুন- রাজস্থান সফরে কী কী দেখবেন, কেন দেখবেন?

হাজারদুয়ারির সামনে র ময়দানে রয়েছে মদিনা মসজিদ। এটির নির্মাতা নবাব সিরাজদ্দৌলা। এর কাছেই রয়েছে বাচ্চাওয়ালি কামান আর ঘড়িঘর মিনার। হাজারদুয়ারির ঠিক বীপরীতে রয়েছে বাংলার সবচেয়ে বড় ইমামবাড়া। ১৮৪৭ সালে তৈরি এই ইমামবাড়র মধ্যে মসজিদটি বেশ দর্শনীয়।

শুধু মহরমের সময় ১০ দিন এই ইমামবাড়ার মধ্যে প্রবেশের সুযোগ মেলে। এই ইমামবাড়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা মহরম ও বেড়াভাসান উতসবে মেতে ওঠেন। হাজারদুয়ারির ঠিক পিছনে রয়েছে ওয়াসেফ মঞ্জিল প্রাসাদ। এখানেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে একটি সংগ্রহশালা তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন- জম্মু ও কাশ্মীর এবং হিমাচল প্রদেশের জবরদস্ত দুটি ট্যুর প্ল্যান

হাজারদুয়ারির আশে পাশে রয়েছে হলুদ মসজিদ, চক মসজিদ, ত্রিপোলিয়া গেট। হাজারদুয়ারি অ়্চলটা লালবাগ নামেই পরিচিত। এখানকার দূরের দ্রষ্টব্য দেখার জন্য অটো, সাইকেল রিকশা অথবা টাঙা ভাড়া করে নিতে পারেন। একে একে দেখে নিন, তোপখানা, ফুটি মসজিদ, জগত শেঠের বাড়ি, নশীপুর রাজবাড়ি, নশীপুর মহন্ত আখড়া, কাঠগোলা বাগান, আজিমুন্নিশা বেগমের সমাধি মসজিদ, মোতিঝিল। পাশাপাশি অবশ্যই দেখবেন ১৭২৪ সালে মুর্শিদকুলি খাঁয়ের তৈরি বিখ্যাত কাটরা মসজিদ। নজর কাড়ে মসজিদের মিনার দুটি। এই মসজিদের নীচে মুর্শিদকুলি খাঁয়ের সমাধি রয়েছে।

আরও পড়ুন- চলুন মেঘ সূর্যের দেশ অরুণাচল

আরও পড়ুন- ছোট ছুটির খোঁজে ওডিশার অফবিট জায়গা

ভাগীরথীর পশ্চিমপাড়ে রয়েছে আলিবর্দি খাঁ ও সিরাজদ্দৌলার সমাধিক্ষেত্র খোশবাগ। লালবাগ ফেরিঘাট থেকে নৌকা পাবেন ওপারে যাোয়ার। খোশবাগ দেখে চলুন বৈষ্ণবগুরু জগদ্বন্ধুর মন্দির বা বড়ধামে। এ ছাড়া রয়েছে ৫১ পীঠের একটি কীরিটেশ্বর মন্দির।

হাজারদুয়ারি থেকে ৮ কিমি দূরে জিয়াগঞ্জ সদরঘাট থেকে নৌকায় চেপে ওপারে আজিমগঞ্জ পৌঁছে যেতে হবে গঙ্গাতীরের বড়নগর গ্রামে। নাটোরের রানি ভবানী এখানেই তৈরি করেছিলেন তাঁর প্রাসাদ আর একাধিক মন্দির। এখানকার চারবাংলা মন্দির, ভবানীশ্বর মন্দির, জোড়বাংলা গঙ্গেশ্বর মন্দিরের টেরাকোটার কাজ দেখার মতো।

আরও পড়ুন- এখানে স্বর্গ আছে দেখে নিন পশ্চিম সিকিম

আমাদের ভ্রমণ গ্রুপে যুক্ত হতে চান? তাহলে ক্লিক করুন এখানে

ইউটিউব চ্যানেলে দেখুন Travel Tv Bangla

কীভাবে যাবেন- শিয়ালদহ থেকে মুর্শিদাবাদ স্টেশনে ট্রেন যাচ্ছে লালগোলা প্যাসেঞ্জার ও ভাগীরথী এক্সপ্রেস। রেলস্টেশন থেকে হাজারদুয়ারি প্রায় ২ কিমি।

ধর্মতলা থেকে একাধিক সরকারি ও বেসরকারি বাসও রয়েছে যাচ্ছে বরহমপুর, সেখান থেকে ১২ কিমি দূরে মুর্শিদাবাদ। অটো বা শএয়ার গাড়িতে যেতে পারেন।

কোথায় থাকবেনহোটেল মঞ্জুষা, হোটেল যাত্রিক, হাজারদুয়ারি লজ। এ ছাড়া সরকারি যুবআবাসও রয়েছে, চাইলে অনলাইনে বুক করে নিতে পারেন।

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

পাশের রাজ্যেই রয়েছে প্রকৃতির এক আদিম জায়গা, বেড়িয়ে আসুন চুপিসারে

স্বাতী চ্যাটার্জি- কাশ্মীর, কেরালা, দক্ষিণভারত, উত্তরভারতসহ গোটা ভারততো বেড়াবেন। আমাদের দেশে দেখার জায়গা অনেক। প্রাকৃতি, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!