Breaking News

কাশ্মীর ও হিমাচলের ২টি জবরদস্ত সফর পরিকল্পনা, শেয়ার করুন বন্ধুদের সঙ্গে

জম্মু ও কাশ্মীর ১৫ দিন ১৪ রাত

স্বাতী চ্যাটার্জি

১ দিন- ট্রেনে ওঠা।

২ দিন- সারাদিন ট্রেনে

৩ দিন- সকালে বা দুপুরে জম্মু পৌঁছে হোটেলে প্রবেশ। খাওয়া দাওয়া সেরে বেরিয়ে পড়ুন জম্মু দর্শনে। দেখে নিন রঘুনাথজি মন্দির, বাহু ফোর্ট, রণবীরেশ্বর মন্দির, অমর হল প্যালেস, মহামায়া মন্দির, পঞ্চাবতার মন্দির।

৪ দিন- এদিন জম্মুতে থেকে বৈষ্ণোদেবী ঘুরে নিতে পারেন। চাইলে সকাল সকাল কাটরা গিয়ে বৈষ্ণোদেবীর পথে হাঁটতে শুরু করুন। কাটরাতে সে দিন থাকতে পারেন। কাটরায় বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রেজিস্ট্রেশন অফিস। ওখান থেকে যাত্রার পরচি সংগ্রহ করতে হবে। তারপর অটোতে বাণগঙ্গা, দূরত্ব দেড় কিমি বাণগঙ্গা থেকে চেকপোস্টে পরচি চেকিং করিয়ে হেঁটে বা টাট্টু ঘোড়ায় চড়াই। চাইলে হেলিকপ্টারেও যেতে পারেন। হেলিকপ্টারে গেলে মূল গুহার তিন কিমি আগে ছেড়ে দেওয়া হবে। জায়গার নাম সানজিছাত।

সাধারণ ভক্তরা ভবনে পৌঁছে যাত্রা স্লিপ কাউন্টারে মাতৃদর্শনের জন্য নম্বর নিয়ে লাইন দিতে হবে। মাতৃদর্শন সেরে ভৈরবনাথের দর্শন এখানকার রীতি , আরও দেড় কিমি চড়াই। এখানে কয়েকবছর হল রোপওয়ে চালু হয়েছে। মায়ের বৈষ্ণোদেবীর আরতি দেখতে হলে অনলাইনে দু মাস আগে থেকে টিকিট কাটতে হবে। মায়ের পায়ে অর্ঘ্য দিয়ে ত্রুকূট পাহাড় থেকে নেমে সোজা হোটেলে এসে রাত্রিবাস।

৫ দিন। এদিন কাটরা অথবা জম্মু থেকে শ্রীনগরের পথে রওনা। সাধারণ বাস, ডিলাক্স, সুপারডিলাক্স, শেয়ার গাড়ি, সব ধরণের যানই চলাচল করে। চলার পথে প্রথমে দেখে নিন ১১০ কিমি দূরে পাটনিটপ। ১৯ কিমি দূরে পড়বে সানাসার। সময় সুযোগ করে দেখে নিন দুটি জায়গা। জাতীয় সড়ক ধরে এগোলে দেখতে পারেবন জওহর টানেল বা বানিহাল পাস। সামনে এগিয়ে অবন্তীপুরায় অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত অবন্তী স্বামী মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ। মাটি খুঁড়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে প্রাচীন এই অমূল্য শিল্পকলা। ভগ্ন মন্দির দেখে সোজা শ্রীনগরে। ডাল লেকের ধারে কোনও হাউস বোটে রাত্রিবাস করুন।

৬ দিন। আজ শ্রীনগরের সাইড সিয়িং। গাড়ি ভাড়া করে একের পর এক দেখে নিন মোঘল গার্ডেন। শালিমার বাগ, নিশাত বাগ, চশমাশাহি, দাচিগ্রাম নাসিম বাগ আর সিরাজ বাগ। মার্চ এপ্রিলে টিউলিপের জন্য খোলা থাকে। এ ছাড়া পাহাড়ের মাথায় শঙ্করাচার্য মন্দির, নেহরু পার্ক, হজরতবল মসজিদ, চারচিনার, পরিমহল, শুক্রবার বাদে হরিপর্বতের এট্রি পাস দেওয়া হয়। ওল্ড শ্রীনগর সিটিতে জামি মসজিদ, শাহ হামদান মসজিদ, শের গাহরি, বাদশাহ টুম্ব। বিকেল ফাঁকা রেখে চলে আসুন ডাল লেকে শিকারা ভ্রমণ করতে।

আরও পড়ুন- গাড়োয়াল সফরে কী দেখবেন কেন দেখবেন? ক্লিক করুন

৭ দিন। শ্রীনগর থেকে এদিন ঘুরে আসুন গুলমার্গ, গন্ডোলা চড়ে অবশ্যই আফারওয়াট পর্যন্ত যাবেন। ঘুরে নিন খিলানমার্গ, আলপান্থার লেক। গুলমার্গে দেখুন রানিমন্দির, মহারাজা প্যালেস, স্ট্রবেরি গার্ডেন, শিশু উদ্যান।

৮ দিন। শ্রীনগর থেকে এদিন দেখে নিতে পারেন, ভেরীনাগ, আচ্ছাবল, কোকরনাগ, মার্তন্ড সূর্য মন্দির, ডাকসাম ও আহারবল হ্রদ। এগুলি স্বল্প পরিচিত জায়গা অনেকে প্যাকেজ ট্যুরে এগুলো ডিটেলে ঘোরান না। অথচ বেশ ভালো জায়গা। এটি প্রায় সারাদিনের প্রোগ্রাম। চাইলে পেহেলগাঁওয়ে থেকেও এই ট্যুর করতে পারেন।

৯ দিন। এদিন চলুন সোনমার্গ। সম্ভব হলে ঘুরে নিন ৩ কিমি দূরে থাজিওয়াস হিমবাগ। ফেরার পথে দেখে নিন উলার লেক, ওয়াটলাবে বাবা সুকরদিনের মাজার, মানসবল, ক্ষীরভবানী (৫১ পীঠের একটি)

১০ দিন এদিন চলুন শ্রীনগর থেকে ইউসমার্গ। দূরত্ব ৪৭ কিমি। মাঝে রাস্তায় দেখে নিন চারার-ই শরিফ। ইউমার্গে এক অনাবিল নির্জনতা রয়েছে, যা বহু পর্যটককে আকর্ষণ করে। রয়েছে কিছু ভিউ পয়েন্ট। ঘোড়ায় চেপে ঘুরতে পারেন। হিমালয়ের বেশ কিছু শৃঙ্ঘগ এখান থেকে দেখা যায়।

১১ দিন। এদিন শ্রীনগর থেকে পেহেলগাঁওয়ের উদ্দেশে রওনা দূরত্ব ৯৬ কিমি। শেষ নাগ ও লিডারের সঙ্গমস্থল দেখে নিন। দুপুরের দিকে ঘোড়ায় চেপে আসুন বৈশারণ। পেহেলগাঁওতে রাত্রিবাস।

১২ দিন। এদিন পেহেলগাঁওকে কেন্দ্র করে বেড়ানো। প্রথমে চলে যান আরুভ্যালি ১২ কিমি পথ। আরুতে প্যারাগ্লাইডিং হয়। পথে দেখে নিতে পারেন মিনি জু (শুক্রবার বন্ধ)। মধ্যাহ্ন ভোজ সেরে এবার দেখে নিন বেতাব ভ্যালি। আলাদা প্রবেশ মূল্য দিতে হয়। এখানে পাইন ফারের মাঝে শেষনাগের নীল জলধারা উপভোগ করুন। ৯ কিমি এগোলে চন্দরওয়াড়ি। অমরনাথ দর্শনের পদযাত্রা শুরু এখানেই। ফিরে আসুন পেহেলগাঁওতে।

১৩ দিন। এদিন ভূস্বর্গ ছেড়ে ফেরার পালা। সকালেই ব্রেকফাস্ট সেরে জম্মুর উদ্দেশে রওনা দিন। পথে সেরে নিন মধ্যাহ্ন ভোজ। রাতে ট্রেন ধরুন জম্মু তাওয়াই থেকে।

১৪ দি। সারাদিন ট্রেনে।

১৫ দিন দুপুরে কলকাতা বা হাওড়া পৌঁছনো।

হিমাচলপ্রদেশ ১২ দিন ১১ রাত

স্বাতী চ্যাটার্জি

১ দিন। সন্ধেবেলা হাওড়া থেকে ট্রেনে ওঠা।

২দিন। সারাদিন ট্রেনে কাটানো।

৩ দিন। ভোরবেলা কালকা স্টেশনে নামা। পাশের প্লাটফর্ম থেকে ছাড়ছে সিমলা যাওয়ার ছোট ট্রেন। ধরে নিন। দুপুরে সিমালা পৌঁছে হোটেলে। বিকেলে হেঁটে দেখে নিন সিমলা কালীবাড়ির সন্ধ্যারতি। সস্তায় খেতে চাইলে আগাম টিকিট কেটে কালীবাড়িতে ডিনার সেরে নিন। ম্যালের একপ্রান্তে সিমলা মিউজিয়াম দেখে নিন। সোমবার বাজে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা।

৪ দিন। এদিন সারাদিন সিমলার সাইড সিয়িং। ভোরে ম্যাল থেকে ঘোড়ায় চেপে বা পায়ে হেঁটে ঘুরে নিন জাখু হিলস। ফিরে ব্রেকফাস্ট সেরে গাড়িতে ঘুরে নিন অবজারভেটরাি হিল। সামার হিলে দেখে নিন সঙ্কটমোচন মন্দির। তারাদেবী মন্দির। চ্যাডউইক ঝরনা। আনানডেল রেসকোর্স। প্রসপেক্ট হিলে কামনাদেবীর মন্দির দেখতে ভুলবেন না। বিকেলে হনুমান মন্দিরের সূর্যাস্ত দেখুন।

৫ দিন। আজকে গাড়ি নিয়ে একটু দূরে সফর। সিমলা থেকে ১৩ কিমি দূরে মাশোবরা, আরও ৪কিমি দূরে কুফরি এবং ফাগু আরও ৪ কিমি দূরে। সবকটাই অনিন্দ্যসুন্দর জায়গা। মাশোবরা হয়ে অন্য পথে উত্তরদিকে এগোলে ১৩ কিমি দূরে নালদেরা। গল্ফকোর্স দেখে তত্তাপানি। আছে উষ্ণপ্রস্রবণ। এখানে দেখে নিন মাহুত নাগের মন্দির। বিকেলে সিমলা ফেরা।

৬দিন। আজ গাড়ি ভাড়া করে বা বাসে সোজা মানালি। শেয়ার জিপও চলে। সারাদিনের সফর রাতে মানালিতে রাত্রিবাস। দূরত্ব ২৬০ কিমি।

৭ দিন। আজ মানালিতে বেড়ানো। সকালের দিকে গাড়ি ভাড়া করে ঘুরে নিন হিড়িম্বাদেবার মন্দির, ফোক মিউজিয়াম, তীব্বতিয় মনাস্ট্রি, বশিষ্ঠ আশ্রম, অর্জুন গুহা। ঘুরে আসুন ১৩ কিমি দূরে সোলাং ভ্যালি। সন্ধেতে আলো ঝলমলে ম্যালে সময় কাটিয়ে নেন।

৮ দিন। আজ মানালি থেকে ৫১ কিমি দূরে দেখে নিন রোটাং পাস। ৩৯৮০ মিটার উচ্চতায় রোটাং পাসে সারা বছর বরফ থাকে। এখানকার বিয়াসকুণ্ড থেকে সৃষ্টি হয়েছে বিপাশা নদী। বরফের উপরেই রয়েছে নানা বিনোদনের ব্যবস্থা। হাতে সময় নিয়ে ফিরে আসুন মানালিতে। এ পথে গাড়ি জ্যাম হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন- রাজস্থান সফরে কী দেখবেন, কেন দেখবেন? ক্লিক করুন

আরও পড়ুন- উইকেন্ডে ঘুরে আসুন এক নির্জন নিরালা জায়গা অফবিট বিহার

৯ দিন। আজও গাড়ি ভাড়া করে দেখে নিন একেরপর এক দ্রষ্টব্য। প্রথমে ৬ কিমি দূরে জগতসুখ। তারপরে বৈষ্ণোমন্দির, মনাস্ট্রি, গাধাম, গুম্ফা, হিমালয়ান নায়িংমাপা গুম্ফা, শিবমন্দির। জগতসুখ থেকে ১২ কিমি দূরে নাগ্গর। শহরের প্রাণকেন্দ্রে দেখে নিন রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ। পাশে ফোক আর্ট মিউজিয়াম (সোমবার বাদে প্রতিদিন )। এ ছাড়া গৌরিশঙ্কর মন্দির, জগতিপট মন্দির, ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির, ৬ দাগপো শেদ্রুপলিং মনাস্ট্রি। এবার কুলুতে গিয়ে দুপুরের খাওয়া সেরে নিন। কুলু উপত্যকায় দেখুন সপ্তদশ শতকের নির্মিত রঘুনাথ মন্দির। যার দশেরা উত্সব বিখ্যাত। কুলু থেকে ৪ কিমি দূরে বৈষ্ণেদেবী মন্দির ও ৫ কিমি দূরে ভুবনেশ্বরী মন্দির। কুলু থেকে ৪৫ কিমি দূরে মণিকরণ যাত্রা। পথে দেখে নিন ভুন্টার পার্বতী নদী ও বিপাশা নদীর সঙ্গমস্থল। কাসোল ও জারিগ্রাম পেরিয়ে মণিকরণে রাত্রিবাস।

১০ দিন। উত্তরে হরেন্দ্র পর্বতমালা, পূর্বে ব্রহ্মনালা, দক্ষিমে পার্বতী গঙ্গা, পশ্চিমে বিষ্ণুকুণ্ড নিয়ে পবিত্র তীর্থক্ষেত্র মণিকরণ। সকালেই দেখে নিন গুরুদ্বার ও রামমন্দির। এ ছাড়া রঘুনাথ মন্দির, হনুমান মন্দির, নয়নাদেবী, বৈষ্ণোদেবীর মন্দির দেখে সকাল আটটার মধ্যে গাড়ি ছেড়ে দিন। মণিকরণ থেকে মান্ডি হয়ে হয়ে কাকলার উদ্দেশে রওনা ২৬৭ কিমি। পথে মান্ডিতে দুপুরের আহার সেরে নিন। হাতে সময় বের করতে পারলে তারানা মন্দির ও ভূতনাথ শিব মন্দির দেখে নিন মান্ডির টিলাতে। এবার সোজা কালকা। ১৭৬ কিমি পথ রাতের ট্রেন ধরুন।

১১ দিন সারাদিন ট্রেনে।

১২ দিন সকালেই হাওড়ায় পৌঁছনো।

আপনি কি আমাদের ভ্রমণ আড্ডা গ্রাপে যুক্ত হতে চান? তাহলে এখনই এখানে ক্লিক করুন

সমস্ত ট্যুর প্ল্যান জানতে বা সহযোগিতা পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

খুব সহজে আমেরিকার নাগরিক হওয়ার পথ ‘ডঙ্কি রুট’- এক অজানা কাহিনি

পূর্ণেন্দু ব্যানার্জি- আমেরিকা, স্বপ্নের দেশ। একবার পৌঁছতে পারলেই একটা জীবন পরিপূর্ণ। অর্থ, আভিজাত্য, বৈভব, সামাজিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!