অর্বিট ডেস্ক-হাওড়া জেলায় শিক্ষার প্রসার কীভাবে ঘটেছিল, তার ইতিহাস খুঁজতে গিয়ে বিচিত্র তথ্যের উদ্ভব হয়। যেমন, হওয়ার কথা ছিল প্রাইমারি, ইন্টারমিডিয়েট, কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু হাওড়া জেলায় কলেজই তৈরি হল ১৯২৪ সালে । আর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৩০ সালে। ১৯৪৬ সালে প্রথম মহিলা কলেজের কাজ শুরু হয় শিবপুরে।
১৯২৪ সালে জুলাই মাসে নরসিংহ দত্ত কলেজ স্থাপিত হয়। প্রথমে কলেজটি ছিল দ্বিতীয় শ্রেণি, অর্থাত শুধু আই এ ক্লাস হত। কলেজ ঠিক কোন দিনে স্থাপিত হয়েছিল, তার তেমন কোনও রেকর্ড মেলে না, তবে এই মহাবিদ্যালয় তৈরি হয়েছিল নরসিংহ দত্ত বাহাদুরের নামে। তাঁর মৃত্যু দিন ১৮ জানুয়ারি ধরে কলেজের জন্মদিন পালন হয়। হয়তো তাঁর জন্মদিন জানা যায় না বলেই মৃত্যুদিনকে কলেজের জন্মদিন হিসেবে পালন হয়।
কলেজটি যে জমিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেই জমিটি ছিল, এক ইহুদি সাহাবের। নাম আইজ্যাক রাফাইল বেলিলিয়াস। তিনি ইহুদি হলেও, হাওড়ার অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর স্ত্রীর নাম রেবেকা। হাওড়ায় কলেজ তৈরি নিয়ে জায়গার একটা সমস্যা দেখা দিচ্ছিল।
আরও পড়ুন- কালো তাজের কাহিনি, মুঘল সাম্রাজ্যের দাবিদারের হারানো অধ্যায়
সেই সময় জেলার কিছু গুনি মানুষ যান ইহুদি সাহেবের কাছে। যতটুকু জানা যায়, নরসিংহ দত্তবাবুকে ওই ইহুদি সাহেব পুত্রের মতো স্নেহ করতেন। তিনি জমি দিলেন, তৈরি হল কলেজ। পরে নরসিংহ দত্তের পুত্র সুরঞ্জন দত্তের প্রচেষ্টা ১৯৪০ সালে এই কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়। ১৯৪০ সাল থেকে বি এ ক্লাস শুরু হয়। ১৯৪৬ সালে বি এস সি এবং ১৯৫১ সালে বি কম।
আরও পড়ুন- হাওড়ায় অগ্নিযুগের প্রেক্ষাপটে এক কাহিনি
১৯৬০ সালে সকালে মহিলাদের বিভাগ চালু হয়। এই কলেজের জন্ম লগ্ন থেকে বহু গুনীজনের নাম জড়িয়ে রয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম জ্ঞান সেন, অমরেন্দ্রনাথ মজুমদার, কিরণধন চট্টোপাধ্যায়, বিমলপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। একসময় অধ্যক্ষ ছিলেন, জ্ঞানেন্দ্রনাথ সেন, তিনি প্রফুল্ল রায়ের বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন, সেই তালিকায় নাম ছিল জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ, মেঘনাদ সাহা, জ্ঞানচন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
নানা ইতিহাস, সংস্কৃতি, লোককথা, সাহিত্য সম্পর্কিত নানা বিশেষ ধরণের খবর পেতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ জয়েন করতে পারেন। লিঙ্ক এখানে।