Breaking News

এই স্থাপত্যরীতির মন্দির নির্মাণে রয়েছে এক অদ্ভুত দর্শন, জানেন কি?

স্বাতী চ্যাটার্জি- একটা মন্দিরের পারিপার্শ্বিক আবহ কি আপনার মনে কোনও সঙ্গীতের তরঙ্গ তুলতে পারে? হয়তো পারে। সঙ্গীতের ভিন্ন রাগ রয়েছে। সেই রাগ ও উচ্চারিত নাদের শব্দ থেকে যে অভিব্যক্তি মনের অন্ধকার চোরাগলি ভেদ করে আঘাত হানে। তখনই মনের মধ্যে নয়া অভিব্যক্তির এক ইন্দ্রজাল তৈরি হয়। আর তার নির্যাস মিশে যায় সপ্ত সুর ও সপ্ত রঙে। সূর্যের রঙে।

ভোর হোক, মধ্যাহ্ন বা গোধুলি যে কোনও একটা সময় ধরে নিন। এসে দাঁড়ান মোধেরার সূর্যমন্দিরের সামনে। চোখ বন্ধ করে, নিস্তব্ধ নিঝুম হয়ে, অনুভব করুন নিজের শরীরের থেকে জন্ম নেওয়া শব্দকে। নাদ শব্দ। মনের গতি এক অসম্ভব উড়ান নেবে ব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে দৃশ্য়মান ছায়াপথে। ধীরে ধীরে প্রকাণ্ড আলোক বলয়ের সঙ্গে মিশে যাবেন। খুঁজে পাবেন নিজের মধ্যেই পরমেশ্বরকে।

উপরের কথাটি কোনও প্রবন্ধের ভণিতা নয়। একটি দর্শন। এই দর্শনকে ভিত্তি করেই যখন এক স্থাপত্য গড়ে ওঠে, তখন সেটি কালকে জয় করে হয়ে ওঠে এক বিস্ময়। ভারতীয় প্রাচীন বাস্তুকলার ভিত্তিই তৈরি হয়েছে দর্শন থেকে।

তাই একে বাস্তুকলাই বলা হত, বর্তমানে বলা হয়, বাস্তু বিজ্ঞান। কলা ও বিজ্ঞানের মধ্যে আদিম যুগ থেকে কোনও বিরোধ ছিল না। বিরোধরা শুরু হল, যখন দর্শনের মধ্যেই বিভাজন শুরু হল। ক্রমে একটা অংশের পোশাকি নাম হল বিজ্ঞান। বর্তমানে বিজ্ঞানের জয়জয়াকার, কিন্তু কলার!

বিম্বিসারের স্বর্ণভাণ্ডার, গুপ্তধন কি এখনও আছে?

হিমালয়ের রতবনের তিপরা হিমবাহ থেকে বরফ গলে, জলের একটি ধারা বয়ে এসেছে। পথ মাঝে বিভাজিত হয়ে একটি ধারা মিশে গিয়েছে ঘাংঘারিয়ায় লক্ষ্মণ গঙ্গার সঙ্গে, যা সমৃদ্ধ করে আমাদের সবার প্রিয় ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্সকে। অন্যদিকে, একটি ধারা হয়ে এসেছে অনার্ত ভূমে, পরে যার নাম হয়, গুর্জরাত্র অধুনা গুজরাট (Gujrat)।

মহাভারত মহাকাব্য থেকে জানা যায়, পাণ্ডবেরা যখন নির্বাসনে ছিলেন, তখন অনার্ত ভূমে বনমধ্যে বিচরণের সময় একটি জলস্রোত তারা দেখতে পান। আর সেই স্রোতেই ভেসে আসছে অসংখ্য ফুল। এ দৃশ্য দেখার পরেই দ্রোপদী এ জলস্রোতের নাম দেন পুষ্পাবতী। পুষ্পাবতী নদী, আসছে রতবনের তিপরা হিমবাহ থেকে।

কুমায়ুনে কী দেখবেন? কেন দেখবেন? বিস্তারিত তথ্য জানুন

আজ থেকে প্রায় হাজার বছর আগেকার কথা। অনার্ত ভূম হয়ে উঠেছে গুর্জরাত্র বা গুর্জরদের বাসভূমি। চালুক্য সাম্রাজ্যের রাজা প্রথম ভীম পুষ্পাবতী নদীর তীরে গড়ে তুললেন এক মন্দির। সূর্যমন্দির। আর এই মন্দির তৈরির পিছনেই ছিল এক দর্শন।

সূর্যের থেকেই পৃথিবীর প্রত্যেক প্রাণী ও জীবের জন্ম এবং মৃত্যুর সময়চক্র ঘোরে। তাই মূল প্রাণবিন্দু যদি সূর্য হয়, অন্তিম গন্তব্যও সূর্যের প্রকাণ্ড প্রকাশ গহ্বর। সূর্যই মানব সভ্যতার পরমেশ্বর। আর এই দর্শনকে মাথায় রেখেই স্থপতিদের নক্সা প্রস্তুত ও মন্দিরের পূর্ণরূপ তৈরি হতে লাগল।

ভারতীয় ধ্রূপদী স্থাপত্যকলার অনন্য নিদর্শন মোধেরার সূর্যমন্দির। রয়েছে, গুঢ়ামণ্ডপ, গর্ভগৃহ, সভামণ্ডপ, এবং কুণ্ড। ভারতীয় প্রচীন স্থপত্যকলার এক অনন্য নিদর্শন।

লেখিকার ফেসবুক পেজ ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

খুব সহজে আমেরিকার নাগরিক হওয়ার পথ ‘ডঙ্কি রুট’- এক অজানা কাহিনি

পূর্ণেন্দু ব্যানার্জি- আমেরিকা, স্বপ্নের দেশ। একবার পৌঁছতে পারলেই একটা জীবন পরিপূর্ণ। অর্থ, আভিজাত্য, বৈভব, সামাজিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!