অর্বিট নিউজ ডেস্ক- ভারতের বহু জায়গা রয়েছে, রহস্যময়, তার থেকে বাদ নয় বাংলাও। পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জেলা বাঁকুড়া। আর এই জেলাতেই ১০টির মতো জায়গা রয়েছে, যা রহস্যময়। স্থানীয়দের মতে এই সব জায়গাগুলিতে অলৌকিক ঘটনা ঘটে। তাই রাতের অন্ধকারে যেতে ভয় পান স্থানীয়রা। একে একে দেখে নেওয়া যাক, সেই সব জায়গাগুলি।
জামবেদিয়া শালীনদীপাড়
১। তালিকায় সবার আগেই রয়েছে জামবেদিয়ার শ্মশানঘাট। গঙ্গাজলঘাটি থানা এলাকার গ্রাম জামবেদিয়া। শালী নদীর পাড়ে রয়েছে এই গ্রাম। পাশের গ্রাম সুবর্ণতোড়ে আসতে গেলে নদী পার করে হেঁটে আসতে হয়। নদীর পাড়ের রয়েছে শ্মশানঘাট। স্থানীয় লোকেদের মত, গ্রামের কেউ মারা গেলে, শ্মাশানে নিয়ে আসার সময় নদীর পাড়ে একটি বাঁশ বাগান পড়ে। সেখানে আচমকা মৃতদেহ ভারী হয়ে যায়। যদি কেউ নামানোর চেষ্টা করে, সেই খাট এতো ভারী হয় যে চারজনে তোলা অসম্ভব হয়ে যায়। তাই কষ্ট করে হলেও, ওই বাঁশ বাগানে কেউ দেহ নামাতে চান না। আর রাত আটটার পর নদী পথের রাস্তা কেউ ব্যবহার করতে চান না।
গাংদুয়া ক্যানেল পাড়
২। রহস্যময় এলাকার মধ্যে রয়েছে সেই গঙ্গাজলঘাটি এলাকার দেশুড়িয়া মোড় এলাকা। গঙ্গাজলঘাটি থেকে দেশুড়িয়া ঢোকার আগে একটি ক্যানেল নজরে আসে। সেই ক্যানেল বরাবর মাটির রাস্তা ধরলে সোজা পৌঁছে যাওয়া যায় গাংদুয়া জলাধারে। রাতের পর এই রাস্তাটি অত্যন্ত নির্জন ও ভুতুড়ে হয়ে ওঠে। স্থানীয়দের মত, শীতকালে এই রাস্তা দিয়ে রাতের অন্ধকারে আচমকা কীসের আলো দেখতে পাওয়া যায়। যেন একটা আগুনের গোলা খুব দ্রুত জ্বলে উঠে আবার নিভে যায়। এই দৃশ্য বেশ কয়েক বছর অন্তর দেখা যায়। এই ঘটনার পিছনে কী রহস্য রয়েছে তা আজও অজানা।
মাবনদেবী থান
৩। রহস্যজনক এলাকার তালিকায় রয়েছে মাবনদেবী থান বলে। রাস্তা হল, খাটা পেরিয়ে অমলাদহি হয়ে রাস্তা উঠবে একটি জঙ্গলে। সেখান থেকে রাস্তা দুটি ভাগ হবে একটি যাবে কুকরাজোড়, অন্যটি মুকুন্দপুর মনসাদেবী মন্দিরের দিকে। কুকরাজোড় যাওয়ার মাথপথে জঙ্গলেই মাবনদেবী স্থান। স্থানীয়দের বিশ্বাস, প্রতি শনিবার এই জঙ্গলে দেবী বিচরণ করেন। শুক্রবার রাত থেকে তিনি জাগ্রত হন। কেউ যদি রাতের অন্ধকারে এই রাস্তা ধরে আসে, আর তাঁকে স্মরণ না করলে জঙ্গলের মধ্যেই তাঁকে ঘুরতে হয়। পরের দিন সকাল না হলে রাস্তা পান না পথচারীরা।
আরও পড়ুন- জানুন কালাপানি কারাগারের অজানা কথা ও আন্দামানের ট্যুর প্ল্যান
বারামাসিয়া
৪। বারামাসিয়ার জঙ্গল। এটি বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের কাছে। স্থানীয়দের প্রাচীন মানুষদের দাবি, এই বারামাসিয়া জঙ্গলে এক দেবীর বাস ছিল। তাঁর একটি থানও ছিল। কিন্তু সেই থানের অস্তিত্ব এখন আর মেলে না। কিংবদন্তী রয়েছে, একটা সময়ে এই জঙ্গলে দেবীর প্রবল প্রতাপ ছিল। দেশুড়িয়া গ্রামে এক সময় ইংরেজদের একটি নীলকুঠি ছিল। ফলে ইংরেজদের কিছু অফিসার ও কর্মীরা থাকতো। তারা যখন ওই জঙ্গলে শিকারে যেত, তখন অনেকেই হয় রাতভর অজ্ঞান হয়ে জঙ্গলে পড়ে থাকতো, বা হয়তো তারা বদলি নিয়ে কলকাতায় চলে আসতে বাধ্য হত।
লাতুলডাঙ্গা গন্ধেশ্বরী নদীপাড়
৫। লাতুলডাঙ্গার কাছে গন্দেশ্বরী নদীর পাড়। স্থানীয়দের মত, এই গ্রামের নদীর অন্যপাড়ে রয়েছে, দুটি গ্রাম ক্ষীরকানালি সোনারেখ। বছর ৪০ আগে, এই দুটি গ্রামে আশে পাশে কোনও জায়গায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল, ১২ বারোজন অগ্নিকাণ্ডে মারা যান। তাঁদের এনে নদীর পাড়ে দাহ করা হয়। তারপর থেকেই জায়গা অদ্ভুতভাবে রহস্যজনক হয়ে উঠেছিল। এখন অবশ্য তেমন কোনও ঘটনা ঘটে না, তবে কিছু মানুষের বিশ্বাস ওই জায়গায় অলৌকিক কিছু ঘটে।
আরও পড়ুন- নৃসিংহপুরের রাজবাড়ি কেন অভিশপ্ত?
আপনার নজরে আছে এমন কোনও অলৌকিক জায়গা? লিখে জানান আমাদের orbitnewsindia@gmail.com
বিঃদ্র- এলাকার সামগ্রিক তথ্য এলাকার মানুষদের থেকে সংগ্রাহ করা।