Breaking News

যে ওষুধটি খাচ্ছেন সেটি নিষিদ্ধ হয়ে গেছে কিনা জানেনতো?

অর্বিট মেডিক্যাল ব্যুরো– দ্রুত জীবন যাত্রার মান বদলাচ্ছে। কাজের চাপে বদলে যাচ্ছে খাবার সময় ও ধরণ। পুষ্ঠিকর খাদ্যের জায়গায় চটজলদি মশলাদার খাবার জায়গা করে নিচ্ছে। আধুনিক সময়ে দাঁড়িয়ে বদলাচ্ছে লাইফস্টাইল। আর এসেবর মধ্যেই অত্যন্ত সন্তর্পণে জায়গা করে নিচ্ছে অকাল মৃত্যুর দূতেরা।

বছর চল্লিশের বয়স সুকান্ত দাশগুপ্ত। কাজ করতেন আইটি সেক্টরে। গত শনিবার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে রাত করে বাড়ি ফিরেছিলেন। অত্যন্ত প্রাণবন্ত, উচ্ছ্বল, হাসিখুশি মেজাজের ব্যক্তি ছিলেন সুকান্ত। পরের দিন তাঁর স্ত্রী অনিতার ফেসবুকপোস্ট দেখে স্তম্ভিত তাঁর পরিচিতরা। এ চিত্র শুধু সুকান্তর ক্ষেত্রেই নয়। প্রায় রোজই কোনও না কোনও পরিচিত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এমন বার্তা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান।

আরও পড়ুন- পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছেন, হাতের কাছে রাখুন এই ১০টি ওষুধ

কোনও সমস্যা নেই। কোনও কিচ্ছুটি নেই, আচমকা এমন মৃত্যু আসে কী করে ! গুরুতর দীর্ঘদিনের রোগই একমাত্র অকাল মৃত্যুর বার্তা দেয়, কিন্তু এমন আচমকা কোনও মৃত্যু সত্যিই অবিশ্বাস্য। আসলে এই কাহিনি দুটি দিক রয়েছে। একটি দিক অনেকের জানা, আর অন্য দিকটি ইচ্ছাকৃতভাবে অন্তরালে রাখা হয় বলেই সবারই অজানা। তবে আপনি যদি সচেতন হতে পারেন, তাহলে নিশ্চিন্তে সহজসরল জীবন যাপন করতে পারবেন।

সামনের দিক

গত কয়েক দশকে মডার্ন মেডিসিন চিকিত্সা ব্যবস্থা অভূতপূর্ব আশার আলো দেখিয়েছে। মেডিসিন বিজ্ঞানে এক নয়া দিগন্ত খুলে দিয়েছে। সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মধ্যে প্রায় ঈশ্বরের জায়গা দখল করেছে মডার্ন মেডিসিন বা আধুনিক চিকিত্সা শাস্ত্র। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অন্তরঙ্গ হয়ে গিয়েছে, হাজারো রকমের পরীক্ষা নিরাক্ষা। সুগার, ব্লাডপ্রেশার, অম্লশূল, শারীরিক দুর্বলতা, অকালে চুল ঝরে পড়া, হার্টের সমস্যা আজ কমন ফ্যাক্টর। তেমন বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে সমস্ত রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখারও অজস্র উপায় বেরিয়ে গিয়েছে। আর উল্টো দিকেই এক অদ্ভুত আঁধার।

ধরা যাক, আপনাকে পরীক্ষা নিরিক্ষার পর ডাক্তারবাবু যে ওষুধটি দিলেন, সেটি বাজারে নতুন এসেছে, আপনার কোনও সমস্যা হল, ওষুধটি পরিবর্তন করে দিলেন। আপাতত আপনার সমস্যা মিটে গেল, কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে আপনার এমন বড় সমস্যা দেখা দিল, যা অকল্পনীয়, নিয়ন্ত্রমের বাইরে। অকাল মৃত্যু হয়তো আপনার দোরগড়ায় টোকা মারছে।

উল্টো দিক

এক্ষেত্রে একটি অতি সম্প্রতি উদারহণ দিলে পরিষ্কার হবে। যেমন কোভিড ১৯ এর চিকিত্সায় গোটা বিশ্ব যখন কাঁপছে, এই ওষুধ, সেই ওষুধ বলে নানা পরীক্ষ নিরিক্ষা চলছে, সেই সময় অন্যান্য ওষুধের মতোই বাজারে আসে রেমডিসিভর। বাজারে সংবাদ মাধ্যমে ছেয়ে যায় এটাই একমাত্র জীবনদায়ী ওষুধ। প্রায় তিন চারগুন দামে বিকোতে থাকে এই ওষুধ। এক শ্রেণির চিকিত্সক গলা ফাটাতে থাকেন, এই গুজবের পিছনে না দৌড়তে। অন্যদিকে আর এক শ্রেণির চিকিত্সক বিভিন্ন মিডিয়া হাউসে এসে অত্যন্ত সযত্নে রেমডিসিভির প্রমোট করতে থাকেন। যদিও মাস খানেকের মধ্যে গোটা বিশ্বের একটা বড় চিকিত্সকমহল জানিয়ে দেয়, কোভিড চিকিত্সায় রেমডিসিভিরের কোনও ভূমিকা নেই। তারপরেও কলকাতার কিছু চিকিত্সক গলা ফাটিয়েছেন রেমডিসিভিরের জন্য।

এই উদাহরণ থেকেই পরিষ্কার, একটা অংশের চিকিত্সক যতটা স্বাস্থ্য সচেতন আর একটা অংশ তা নয়। ঠিক তেমনই, সরকার কঠোর নজরদারি চালানোর পর প্রতি বছর কিছু মেডিসিন তৈরি, প্রস্তুত, প্যাকেজিং ও বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা চালায়। কিন্তু সেই ওষুধ ভিন্ন ব্র্যান্ড নামে চলতে থাকে। ভারত সরকার ৩৪৪ টি ওষুধকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।

বাতিল ওষুধের পুরো তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন।

এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ চিকিত্সক জানান, সমস্ত পেশাতেই অসাধুচক্র রয়েছে। দুর্ভাগ্য চিকিত্সশাস্ত্রে সেই অসাধুচক্র বড় আকার নিচ্ছে। বিশেষ করে কর্পোরেট সেক্টরের জন্য। আন্তর্জাতিক ফার্মা লবিও অদ্ভুত যুদ্ধ শুরু করেছে। কোনও সমস্যা না থাকলেও সমস্যা তৈরি করো। আর এ ব্যাপারে যে সমস্ত চিকিতসকরা গলা ফাটাবেন, তাঁদের কেউ গুরুত্ব দেন না। একটা সময়ে একটি ওষুধের তিন থেকে চারবার ট্রায়াল হত। তারপর সেই ওষুধ মাস স্কেলে ছড়ানো হত। এখন ধীরে ধীরে সিস্টেম বদলাচ্ছে, বাজারে নতুন ওষুধ আনা হচ্ছে, ডাক্তারের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে, সেই ফিডব্যাক নিয়ে ডাক্তারেরা বিদেশে সেমিনারে যাচ্ছেন। কয়েক বছর বাদে তার ফল ভুগতে হচ্ছে জনগনকে। আর পুরো বিষয়টি ঘটছে অত্যন্ত সন্তর্পণে। আজ যদি এই বাতিল হওয়া ওষুধগুলো সত্যি পরীক্ষা করে বাজারে ছাড়া হত, তাহলে এগুলো কি বাতিল হত? আর দেখুন, যত বাতিল হচ্ছে প্রায় পুরোটাই ফিক্স ডোজের কম্বিনেশন ওষুধ। এতো কিছু জেনেও বাজারে আসছে, মানুষকেও শত শত টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

তাহলে উপায়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিত্সকের মত, আপনাকে বিচারবুদ্ধি দিয়ে বুঝতে হবে। এখন সময় এসেছে আন্তর্জাতিক স্তরে রোগ ও তার চিকিত্সা নিয়ে আপনাকেই খোঁজ নিতে হবে। ভরসা কোন চিকিত্সকের উপর করবেন তা আপনাকেই নির্বাচন করতে হবে। এর বাইরে কিছুই করার নেই। দেশের নীতি নির্ধারকদেরও দোষ দিয়ে লাভ নেই। আফটার অল, তাদের যে অভিজ্ঞ কমিটি মিস গাইড করছে না এমনটাতো নয়।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা জনচেতনামূলক পোস্ট পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

বিজ্ঞাপণের জন্য যোগাযোগ করুন +91 9062040724

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

চুল ঝরে পড়ছে? জানুন আসল কারণ

আপনি কি খেয়াল করছেন, স্নান করতে গিয়েছে আগের থেকে চুল বেশি ঝরছে! তাহলে এখনই সচেতন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!