Breaking News

কার্টুনে আসক্তি? নেশা ছাড়ানোর সহজ কৌশল শিখুন ঘরে বসেই

স্বাতী চ্যাটার্জি- দিন সাতেক আগের ঘটনা, আমাদের বাড়িতে এক ব্যক্তি এসেছিলেন তাঁর ৭ বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। উদ্দেশ্য ছিল গান শেখাবেন। প্রথম দিকে আলাপচারিতায় প্রায় মিনিট পাঁচেক বাচ্চাটি শান্তই ছিল। কিন্তু গোল বাঁধল, যখনই আমি তাকে কাছে টেনে নিয়ে আদর করে কিছু কথা জিজ্ঞাসা করলাম। বাচ্চাটির সঙ্গে একটু ভালোবেসে আচরণ করার পরেই একের পর এক দাবি শুরু হল। আমাকে বাচ্চাটি প্রথম প্রশ্ন করে, তোমাদের বাড়িতে বড় কালার টিভি আছে?

প্রথমে বিষয়টি কেমন খটকা লাগে, তারপর কিছুক্ষণ কথাবার্তা চলার পরেই বুঝতে পারি আসল সমস্যা কোথায়। যদিও প্রথম প্রশ্নটি করার পরেই বাচ্চাটির বাবা কিছুটা অপ্রস্তুতে পড়ে, তাকে টেনে নিয়ে শান্ত গলায় বলে, মিসকে এমন কথা জিজ্ঞাসা করতে নেই। কিন্তু আমি ভদ্রলোককে থামিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলা শুরু করি।

আর এই কথাবার্তা বলাটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ যে ছাত্র বা ছাত্রীটি গান শিখতে আসছে, তার আসল মোটিভেশন কোন দিকে। আর এটা না বুঝলে, বাচ্চাটিকে গান শেখানো যেমন মুশকিল, তেমনই যে কোনও ক্রিয়েটিভ জিনিস শেখানো বড় সমস্যা। ফলে কথা শুরু করলাম।

প্রথমেই মেয়েটির সঙ্গে খুব ভালো ভাবে কথা বলে যেটি জানলাম এবং বুঝলাম, সেটি হল, কার্টুনের পোকা। মেয়েটি পড়াশুনায় ভালো, বুদ্ধিদীপ্ত, চোস্ত, কিন্তু অতিরিক্ত কার্টুনের কারণে মনস্থির একদমই নয়। কখনও ছোটা ভীম, কখনও মটু পাতলু, কখনওবা সিনচেন। আর মনস্থির নয় বলেই, পাশাপাশি আরও কিছু সমস্যা আমদানি হয়েছে, যেমন, একটুতে রেগে যাওয়া, কখনও কখনও জোরে কথা বলা, কার্টুন চরিত্রগুলির মতো অ্যকশন করা ইত্যাদি।

অনেকেই কার্টুন দেখে, সেটা ঠিক আছে, কিন্তু সমস্যা কখন হচ্ছে সেটা বোঝার উপায় হচ্ছে। কোনও একটি বিষয়ের একটি পর্বকে যদি অত্যন্ত সাধারণ ভাবে শুরু, মাঝামাঝি এবং শেষটা ঠিকঠাক বলতে পারে।

অর্থাত গল্প হুবহু বলার দরকার নেই, কিন্তু সাদামাটা বলতে পারলেই হল, এটি থাকলে চিন্তার কোনও কারণ নেই। কিন্তু যদি দেখা যায়, একটি পর্বের শেষ না করে, আরও পাঁচটা পর্বের খণ্ড খণ্ড ঘটনা তুলে ধরছে, বা প্রসঙ্গ বদলে অন্য গল্পকথায় চলে যাচ্ছে তাহলে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। যখনই দেখা যাবে, বাস্তবিক জগত ও কাল্পনিক জগতের মধ্যে পার্থক্য করে আচার ব্যবহার করতে পারছে, তখনই ঠিক আছে। কিন্তু মাঝে মধ্যেই কাল্পনিক জগতে ডুবে গেলেই মুশকিল।

তবে, যাঁরা এই অন্তিম পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন, তাদের অভিভাবকদের ভবিষ্যতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়। তাই আগাম সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন। কার্টুনের নেশা ছাড়ানোর জন্য ঘরোয়া কিছু টাস্ক অবশ্যই অভিভাবকদের করতে হবে। সে আপনি যত বড়ই বিখ্যাত মনোবিদদের দেখান না কেন, বা কাউন্সিলিং করান।

তাই ঘরের মধ্যে অভিভাবকেরা যদি একটু সময় দেন তাহলে সমস্যার সমাধান সম্ভব। যেহেতু আমরা অনেকেই এখন অফলাইনের পাশাপাশি, অনলাইনেও গান শেখাই। তাই দেখেছি, বহু শিশু ছাত্রছাত্রী কার্টুনের পোকা।

তবে, আমি বলবো, এই সব শিশুদের যদি কোনও ক্রিয়েটিভ মানে গান, নাচ, ছবি আঁকার পাশাপাশি মাইন্ড ডেভেলপমেন্ট গেম খেলানো যায়, তাহলে সমস্যার সমাধান হয়। বাকি যাঁরা বাড়িতে বসেই কার্টুনের নেশামুক্তির পথ খুঁজছেন, তাঁরা যোগাযোগ করতে পারেন আমার বিজ্ঞাপিত নম্বরে।

লেখিকার ফেসবুক পেজ ফলো করতে হলে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের চ্যানেলে যুক্ত হয়ে যান

About Orbit News

Check Also

গোয়া বেড়াতে যাচ্ছেন? ভুলেও যাবেন না ওই বাড়িতে

অর্বিট পডকাস্ট– ভূতের গল্প কে না শুনতে ভালোবাসে। কিন্তু ঘটনাচক্রে বেড়াতে গিয়ে এমন যদি কোনও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!