অর্বিট ডেস্ক- রাজ্যে ৭ শতাংশের নীচে চলে যাওয়া বামেরা কি আবার ফিরছে রাজ্যে? এ প্রশ্নের উত্তর মিলবে আগামী ২ মে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি সমর্থকদের একাংশের যে দাবি ছিল সাইনবোর্ড হয়ে গিয়েছে বামেরা, সেই প্রবাদকে ভেঙে চুরমার করে দিল অর্বিটের সমীক্ষা।
নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর থেকে পঞ্চম দফার ভোট পর্যন্ত লাগাতার জেলা স্তরে সমীক্ষা চালানো হয়। সেই সমীক্ষাতে জনমানসের মন বুঝতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রাখা হয়, আর সেই প্রশ্নের উত্তরের নির্যাস যা বেরিয়ে এসেছে, তাতে পুনরায় বামেদের দিকেই ফিরছে মানুষ।
অর্বিটের প্রশ্ন ছিল সাধারণ মানুষের কাছে
১। এবারের নির্বাচন আপনাদের মূল দাবি কি?
২। কীসের ভিত্তিতে প্রার্থীদের পছন্দ করছেন?
৩। বাম আমল, তৃণমূল আমল এবং দেশের পর পর দুবার ক্ষমতায় আসা বিজেপি, কাজের দিক থেকে কাদের সামনের সারিতে রাখছেন?
৪। স্থানীয় সমস্যায় কোন দলকে বেশি কাছে পেয়েছেন?
৫। কাদের ইস্তেহার অনেক বেশি বাস্তববাদী মনে হয়েছে?
এমন আরও এলাকা ভিত্তিক, জাতি, ধর্মীয় সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু এলাকায় আঞ্চলিক সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়ছে। অধিকাংশ জায়গাতেই পাল্লা ভারী হয়েছে বামেদের দিকে। সমীক্ষায় ৮৭ শতাংশ মানুষ চাকচিক্যহীন যুব মুখকেই পছন্দ করছেন। সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলেছে, তৃণমূল-বিজেপি দলের তারকা প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের। অনেকেইর দাবি, তারকা প্রার্থীদের সঙ্গে তারা নিজেদের রিলেট করতে পারছেন না, সেই তুলনায় সংযুক্ত মোর্চা তথা বামেদের যুব মুখগুলোকে অনেক বেশি বাড়ির ছেলে মেয়ে মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন- প্রাণবায়ু নাও পাই, কর তবু দেওয়া চাই, এ কোন দেশ!
চলতি নির্বাচনে যে হারে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে অ কথা কু কথা লাগাতার ভাবে রাজ্যের মানুষ শুনেছে, সেখানে সংযুক্ত মোর্চার কোনও প্রার্থীদের মুখে এমন আক্রমণ ধরা পড়েনি। রাজ্যের বহু এলাকার মানুষ তাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের মুখে অকথা কুকথা শুনতে চান না। ফলে রাজ্যে বর্তমান যে রাজনীতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এটা আদর্শ হতে পারে না।
সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষ এবং মহিলাদের প্রতিক্রিয়া বামেদের পক্ষে আশা ব্যঞ্জক। তাঁদের দাবি, বামেদের অত্যাচার যে ভাবে রাজ্যে ছাপ ফেলেছিল, তার অধিকাংশই যে মিথ্যে প্রচার তা বোঝা গিয়েছে, কারণ, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর কোনও সিপিএম নেতাকে অপরাধে সাব্যস্ত করতে পারেনি।
পাশাপাশি, করোনায় লকডাউন, আমফানের পর, কারা সরকারি সাহায্য পেয়েছে, আর বাম যুবকর্মীরা কী ভাবে এলাকায় এলাকায় এসে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খবর নিয়ে কাজ করেছে, তা নিজেদের চোখে দেখেছেন, কিন্তু কোনও সংবাদ মাধ্যম বা কেউই প্রচার করেনি।
প্রার্থী পছন্দের মধ্যে স্থানীয় যুবমুখের পক্ষেই অধিকাংশ মানুষ কথা বলেছেন, তাঁদের যুক্তি, ভিন জেলা থেকে কোনও তারকা প্রার্থী এলাকায় মানুষের ভালো করতে পারে না। কারণ তারা নিজেদের চোখে এলাকা দেখে না, বোঝে না, আসেও না। পুরোটাই কাজ করে দলীয় কর্মী সমর্থকদের রিপোর্টের ভিত্তিতে। সেই জায়গায় বাম তথা সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীরা এলাকার মানুষ, দেখতে পাওয়া যায় সারা বছর ক্ষমতায় না থাকলেও অসময়ে কাজে আসে।