বিকানির-জয়শলমির-বাড়মের-যোধপুর
বাঙালির ভ্রমণ তালিকায় রাজস্থানের নাম ওতোপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। যদি এর কৃতিত্ব সত্যজিত রায়ের। সোনার কেল্লা ছবিতে যেভাবে রাজস্থানের ইতিহাসকে ছুঁয়ে দেখা হয়েছে, তেমনই এক রহস্য রোমাঞ্চ গল্পের বুনোটে এক অনন্য শিরোপা দেওয়া হয়েছে রাজস্থানের প্রেক্ষাপটকে।
রাজস্থানের ইতিহাসের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে একাধিক বীরত্বের ঐতিহাসিক কাহিনী এবং চরিত্র। তাঁদের মধ্যে অন্যতম, রানী পদ্মাবতী, মীরাবাই, রানা প্রতাপ সিংহ ইত্যাদি। সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকে রাজস্থানের ইতিহাসের হদিস মেলে। শক, গুপ্ত, হুন শাসনের পর সপ্তম শতকে রাজপুতদের দখলে আসে রাজস্থান।
রাজস্থানের অন্যতম আকর্ষণ স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের অনন্য মেলবন্ধন। অসংখ্য প্রাসাদ আর দুর্গ। এখানকার বিখ্যাত হস্তশিল্প কাঠপুতলি, মিনাকারি, মিরর ওয়ার্ক, বল্কপ্রিন্ট ইত্যাদির খ্যাতি দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারেও।
বিকানির-
হাওড়া থেকে যোধপুর এক্সপ্রেস ধরে দীনদয়াল উপাধ্যায়, আগ্রা হয়ে বিকানির। জয়পুর হয়ে গেলে শিকার, লছমনগড়, রতনগড় হয়ে সড়কপথে ৩১৭ কিমি দূরে বিকানির। রুক্ষ এলাকা এক সময়ে এই জায়গা ছিল বাণিজ্যের কেন্দ্র, পরে জাঠ ও তারও পরে রাঠোর বংশীয় রাজারা দখল করে। ১৪৮৮ সালে নতুন বিকানির শহর গড়ে ওঠে। বিকানিরে দেখার মতো অনন্য জায়গাগুলি হল, জুনাগড় ফোর্ট, লালগড় প্রাসাদ, গোল্ডেন জুবিলি মিউজিয়াম, স্টেট আর্কাইভ, দেবীকুণ্ড, শিববাড়ি মন্দির, ভাণ্ডেশ্বর জৈনমন্দির, ক্যামেল ব্রিড্ং ফার্ম, বিখ্যাত করণীমাতার মন্দির।
জয়শলমির-
বিকানির থেকে ২১৯ কিমি রাস্তা পেরোলে পোখরান, তার থেকে আরও ১১৯ কিমি দূরে জয়শলমির। পোখরান থেকে ১২ কিমি দূরে রামদেওরা, এখানেই ছিল সোনার কেল্লা ছবির শুটিং স্পট। রয়েছে একটি বড় রামমন্দির। জয়শলমিরে একে একে দেখে নিতে পারেন, জয়শলমির ফোর্ট। এটি ছিল ভাটি রাজপুতদের রাজধানী। এছাড়া দেখে নিন সিটি প্যালেস, প্রাচীন জৈন মন্দির, পাটোয়াঁ কি হাভেলি, নাথমলজি কি হাভেলি, সেলিম সিংকি হাভেলি, তিলোঁ কা পোল, গদসিসর লেক, ফোক লোর মিউজিয়াম, তাজিয়া টাওয়ার, ব্যাসছত্রি, অমরাসাগর, মূলসাগর, রামকুণ্ড, লোধুর্বা, বড়া বাগ, সাম ডিউন।
বাড়মের-
রুক্ষ পাহাড়ে ঘেরা ছোট শহর বাড়মের। এখানে রয়েছে সূর্য দেবতার প্রাচীন বালার্ক মন্দির। শহরে রয়েছে, তিনটি জৈন মন্দির। হস্তশিল্প সামগ্রীতে সাজানো বাজার। এ ছাড়া মহারাজা সামন্সিংহ দেওয়ের মন্দির দেখে নিতে পারেন। বাড়মেরে একে একে দেখে নিন, মেবানগর, সাফেদ আখড়া, মহাবীর পার্ক, ৩৮ কিমি দূরে হাতমা গ্রামের কাছে কিরাডু মন্দির। কিরাডুর প্রাচীন নাম ছিল কিরাটকুপ।
যোধপুর-
সময়টা ১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দ। রাঠোর রাজা রাও যোধা এই শহরের পত্তন করেন, সেই সঙ্গে মান্ডোর থেকে রাজধানী সরিয়ে যোধপুরে আনেন। এখানে রয়েছে দুর্ভেদ্য কেল্লা মেহেরানগড় ফোর্ট। কেল্লায় রয়েছে একাধিক মহল, শিশুমহল, শিলেখানা, দৌলতকানা, এই কেল্লায় একাধিক জিনিস দেখার মতো। মেহেরনগড় থেকে বেরিয়ে বাঁ দিকে যেতে পড়বে যশোবন্ত থাডা, পরে দেখে নিন উমেদ ভবন, গভর্নমেন্ট মিউজিয়াম, বালসমন্দ লেক, মান্ডোর উদ্যান, কৈলানা লেক, মহামন্দির, গিরদিকোট, সর্দার মার্কেট।