অর্বিট ডেস্ক-গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির বাড়তি জায়গা দখল করার পরেই তৃণমূল নেতৃত্ব বুঝতে পারে দিদির জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে। তার মূল কারণ ছিল একটি বিশেষ গোষ্ঠীর তোষণ। এই এই সময়ই রাজ্য রাজনীতির ময়দানে ভাড়া করে আনা হয়, রাজনৈতিক কৌশল গুরু প্রশান্ত কিশোরকে। তাঁকে কত টাকায় ভাড়া করা হয়েছে, তা নিয়ে যেমন একটা জনমানসে কৈতুহল আছে, তেমনই বাড়তি নজর রয়েছে এবারের নির্বাচনকে ঘিরে। কারণ বাংলার মাটিতে এমন নজির নেই, যে কোনও ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন জিততে পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটিজিস্টকে ভাড়া করেছে।
রাজনৈতিকমহলের একাংশের মত, দলের জনপ্রিয়তা পুনরুদ্ধার করতে প্রশান্ত কিশোরকে বিপুল ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। প্রশান্ত সেই দায়িত্ব নেওয়ার পর, ধাপে ধাপে প্রায় পাঁচটি পদক্ষেপ করেন। অনেকটা পঞ্চবাণের মতো। প্রথম, দলের বিধায়ক থেকে মন্ত্রীদের আচার আচরণের বিধি তৈরি করা।দ্বিতীয় গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে নতুন মুখ তুলে আনা, তৃতীয় দলের মধ্যে যে সমস্ত নেতানেত্রীদের ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে, সেগুলি পর্যালোচনা করে সুপ্রিমোর হাতে তুলে ধরা, চতুর্থ দলের মধ্যে যে সমস্ত নেতা নেত্রীর বিরুদ্ধে জনমানস ও নীচুতলার কর্মীদের ক্ষোভ আছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া, পঞ্চম দলের যে সমস্ত হেভিওয়েট নেতানেত্রী রয়েছে, তাদের ছাঁটলে, পরিপূরক শক্তি আছে এমন নেতানেত্রীকে বিরোধী শিবির থেকে নিজেদের দলে টেনে আনা।
তৃণমূলের একাংশ নেতৃত্বের অন্দরমহলের খবর, তৃণমূল সুপ্রিমোর একাংশ ঘনিষ্ট নেত্রীস্থানীয় কর্মী এই প্রশান্ত কিশোরের খবরারি মেনে নিতে পারেনি। প্রশান্তের টিমের তৈরি বিধি নিষেধ অনেকেই মানেনি। অনেকের মত, মানুষ ভোট দেবে কাজ দেখে, কোনও কৌশল পরামর্শদাতার কায়দাবাজিতে নয়। কিন্তু তৃণমূল সুপ্রিমো কাজের থেকে কৌশলেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি নির্বাচনী প্রার্থী তালিকাতেও তার ফল মিলেছে, সোনালী গুহ, পূর্ণেন্দু বসুসহ একাধিক নেতা নেত্রী টিকিট পাননি। তৃণমূল নেতৃত্বের মত, যে সমস্ত নেতা নেতৃত্রীদের ঔদ্ধত্য বেড়ে গিয়েছিল, তাদের সাইড লাইন করে ভোট বৈতরণী পার করার চেষ্টা করছে দল। যদিও বিরোধীদের মত, এ সবই আইওয়াশ।